গতকাল এক বিদেশির ২৩ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রির আদেশে বাজার পতনে বড় ভূমিকা রাখে
দেশের শেয়ারবাজারে ক্রমাগত পতন হচ্ছে। বিক্রির চাপ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাজারে পতন অব্যাহত রয়েছে। বাড়তি বিক্রির চাপ সামলাতে পারছে না দেশের শেয়ারবাজার।
অবস্থা এমন যে লেনদেনের শুরুতে শেয়ার বিক্রির বড় অর্ডার এলে বাজার ঝুঁকে পড়ে। দেশের প্রাতিষ্ঠানিক ও ব্যক্তি বিনিয়োগকারীদের নিষ্ক্রিয়তার কারণেই শেয়ারবাজারের এমন অস্থির পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।
সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবস বুধবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে কিছু বিদেশি বিনিয়োগকারীর বিক্রির চাপ সামলাতে পারেনি। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে জানা গেছে, এক বিদেশির ২৩ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রির আদেশ বাজার পতনে বড় ভূমিকা রেখেছে।
ডিএসই সূত্রে জানা গেছে, বুধবার ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নিয়েছে পাঁচটি বিদেশি বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে তিনটি কোম্পানিকে শেয়ার বিক্রির নির্দেশ দিয়েছে। আর দুইজন বিদেশী কিছু শেয়ার কিনছেন। শেয়ার বিক্রি করা তিনজন বিদেশীর মধ্যে একজন ২৩ কোটি টাকার কিছু শেয়ার বিক্রির আদেশ দিয়েছেন।
লেনদেনের শুরুতে সংশ্লিষ্ট শেয়ারের দাম ব্যাপক হারে কমতে থাকে। ফলে অন্যান্য শেয়ারও দাম হারানোর প্রতিযোগিতায় নেমেছে। ফলে লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ডিএসইর প্রধান সূচক আগের দিনের চেয়ে ২৭ পয়েন্ট কমেছে। যদিও কোম্পানির বেশিরভাগ শেয়ার এখনও ফ্লোর প্রাইসের মধ্যে আটকে আছে, ২৭-পয়েন্ট ড্রপকে বিনিয়োগকারীরা একটি বড় পতন হিসাবে দেখছেন। এর আগে ১৪ আগস্টও সূচকটি ৩০ পয়েন্টের ব্যবধানে লেনদেন শেষ করেছিল।
দিনের প্রথম প্রহরে বড় পতনের সূচনা দেখে দেশের বেশিরভাগ ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী ‘অপেক্ষা করুন এবং দেখুন’ নীতি গ্রহণ করেন। ফলে ক্রেতাদের দুর্ভোগে সূচক ৩৬ পয়েন্টের বেশি পতনের মধ্য দিয়ে দিনের লেনদেন শেষ হয়।
গত এক বছরে ডলারের বিপরীতে রুপির ব্যাপক অবমূল্যায়নের কারণে সুযোগ পেলেই বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো শেয়ার বিক্রি করছে। তবে ফ্লোর প্রাইসের কারণে ইচ্ছামতো শেয়ার বিক্রি করতে পারছেন না তারা।
সম্প্রতি স্কয়ার ফার্মাসহ বেশ কয়েকটি ব্যাংক ও ফাউন্ডেশনের শেয়ার ফ্লোর প্রাইস থেকে বেরিয়ে এসেছে। আর এ সুযোগে বিদেশিদের একটি অংশ শেয়ার বিক্রি করছে। এ কারণে স্কয়ার ফার্মাসহ কয়েকটি শেয়ারের ফ্লোর প্রাইস ফিরে এসেছে।
বিদেশিদের বিক্রির চাপে বেশির ভাগ মৌলিক শেয়ার ফ্লোর প্রাইস থেকে বের হতে পারছে না। তবে শেয়ার ব্যবসায় স্থানীয় বিনিয়োগকারীদের অবদান বেশি।
তবে, প্রাতিষ্ঠানিক এবং ব্যক্তিগত বিনিয়োগকারীদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ এখন সাইডলাইনে রয়েছে বা নিষ্ক্রিয়, যার কারণে বিদেশীদের বিক্রির চাপ সামলানো যাচ্ছে না বলে বাজার বিশ্লেষকরা মনে করেন।